এবার প্রবল বর্ষণে যুমনা নদীর পানি বেড়ে ভারতের রাজধানী দিল্লির বিভিন্ন অঞ্চল ডুবে গেছে। লালকেল্লায় পানি ঢুকেছিল বৃহস্পতিবার। শুক্রবার বন্যার তোড়ে সুপ্রিম কোর্টও তলিয়ে গেছে। পানি ঢুকে পড়ছে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিস্থল রাজঘাটেও। চারিদিকে অথৈ পানিতে ভারতের রাজধানীর বিদ্যুৎ সরবরাহ ও সুপেয় পানি সরবরাহ ব্যবস্থা অব্যাহত রাখা বেশ কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এর মধ্যে দিল্লির সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বিভাগের একটি যন্ত্র বিকল হয়ে যাওয়ার যমুনার জল তীব্র গতিতে শহরের দিকে ধেয়ে আসছে। শহরে প্রবেশ করা পানির প্রবাহ বন্ধ করার জন্য ‘ইতোমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ শুরু’ হয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল সেনাবাহিনীর সাহায্য চেয়েছেন।
এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যমুনার পানিতে রাজধানী প্লাবিত হওয়ায় দিল্লি সরকার বৃহস্পতিবার থেকেই স্কুল, কলেজ, শ্মশান, এমনকি পানি শোধনাগার বন্ধ করে দিয়েছে। অপ্রয়োজনীয় সরকারি অফিস এবং স্কুল ও কলেজ রবিবার পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার যমুনা নদীর পানিস্তর সর্বকালের সর্বোচ্চ উচ্চতায় উঠেছিল, শুক্রবার থেকে তা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে।
এদিন ভোর ৬টায় যমুনার পানিস্তর ২০৮ দশমিক ৪৬ মিটারে দাঁড়িয়েছে। যা আগের দিনের তুলনায় ২০ সেন্টিমিটার কমেছে। এদিন বিকেল নাগাদ আরও ১৬ সেন্টিমিটার কমতে পারে বলে এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। সংবাদ মাধ্যমটি আরও জানিয়েছে, আইটিও এবং রাজঘাটের এলাকাগুলি এখনও পানিতে নিমজ্জিত, ইতোমধ্যেই ভয়াবহ পরিস্থিতিকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে৷ বন্যার জল শহরের কেন্দ্রীয় অংশের তিলক মার্গে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত পৌঁছেছে।
এ অবস্থার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ফ্রান্স থেকে দেশে ফিরতে নির্দেশ নিয়েছেন এবং দিল্লির বন্যার পরিস্থিতির বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন এনডিটিভি। অতিপ্রবল ভারি বর্ষণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে প্রায় গোটা উত্তর-পশ্চিম ভারত। প্লাবন ও ধসে জেরবার হিমাচল প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ড। ভারতের আবহাওয়া অফিস আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়ে বলেন, ১৭ জুলাই পর্যন্ত ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রবল বৃষ্টির কারণে পানির প্লাবন ও দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত উত্তর-পশ্চিম ভারতে ১৪৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। হিমাচল প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ড ছাড়াও ভারি বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাঞ্জাব ও হরিয়ানাও। হরিয়ানায় ১৬ জন এবং প্রতিবেশী পাঞ্জাবে ১১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।